মাদারীপুর, ৭ মে : মাদারীপুর জেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলম মীরার কান্দি গ্রামে একটি শতবর্ষী বটগাছকে ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কেটে ফেলার ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুমার নদীর তীরে অবস্থিত এই বটগাছটি স্থানীয় মুসলমান ও হিন্দু উভয় ধর্মের মানুষের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করত। তারা গাছটির গোড়ায় মোমবাতি, আগরবাতি জ্বালিয়ে মানত করতেন এবং রোগবালাই থেকে মুক্তি লাভের আশায় সেখানে নতুন কাপড়, মিষ্টি ও অন্যান্য জিনিসপত্র রেখে যেতেন।
সম্প্রতি বৈশাখ উপলক্ষে গাছটির নিচে মেলা ও বাউল গান আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু এক পক্ষের বাধার কারণে সেই আয়োজন থেকে স্থানীয়রা পিছিয়ে আসেন। তবে মানতের বিষয়টি চলতে থাকে। সোমবার সকালে স্থানীয় কিছু আলেম ও জনতা মিলে গাছটি কাটতে শুরু করেন। বর্তমানে গাছটির গোড়ার কিছু অংশ কাটা বাকি রয়েছে।
মাদারীপুর বন বিভাগের জেলা বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "আমরা ঘটনাটি শুনেছি এবং সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে এবং তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব জানান, "গাছটি এখনও জীবিত আছে এবং আমরা গাছটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনার পর থেকে গাছের মালিক হান্নান হাওলাদার ও সাত্তার হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।" এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan